ফরেক্স ট্রেডিং এর অন্যতম গুরুত্তপুর্ন একটি বিষয় হল সঠিক একটি ব্রোকার নির্বাচন। ইতিমধ্যে অনেক ট্রেডার ব্রোকার নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়েছেন কেউ কেউ না বুঝে ভালো ব্রোকার নির্বাচন করতে না পেরে ইনভেস্ট নিয়ে সমস্যায় পড়ে গেছেন। আবার কাউকে দেখা গেছে ভালো ট্রেড করেও ব্রোকারের নানা রকম বেড়াজালে পড়ে টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না । এই রকম উদহারন অনেক আছে।
তাই আজকে আলোচনা করব সঠিক একটি ব্রোকার কিভাবে নির্বাচন করবেন এবং কিভাবে নিশ্চিত হবেন যে এই ব্রোকারের কাছে আপনার ইনভেস্টমেন্ট কতটুকু নিরাপদ কিংবা ইনভেস্টমেন্ট কতটুকু হওয়া উচিত ইত্যাদি ভিবিন্ন বিষয় নিয়ে।
যেসব ব্রোকারে নিম্নের পয়েন্টস গুলো পাবেন সেই ব্রোকারে ট্রেড করা থেকে বিরত থাকুন।
স্লিপেজঃ
আপনি যে প্রাইসে ট্রেড ওপেন করতে চেয়েছেন এবং যে প্রাইসে ট্রেড ওপেন করতে পেরেছেন তার মধ্যবর্তী পার্থক্যই হল স্লিপেজ। এই ক্ষেত্রে আপনি কখনো ইন্সটেন্ট অর্ডারে একচুয়েল প্রাইসে ট্রেড ওপেন কিংবা ক্লোজ করতে পারবেন না। সলিড এবং নো ডিলিং ডেস্ক ব্রোকারে স্লিপেজ থাকে না।
নতুন ব্রোকারঃ
এটা বলছি না যে নতুন ব্রোকারে ট্রেড করা যাবে না, তবে অনেক নতুন ব্রোকার আছে যারা কয়েকমাস মার্কেটে একজিস্ট করে আপনার মূলধন নিয়ে গায়েব হয়ে যায় তেমনি একটি ব্রোকার হল Kiwifxbank তাই নতুন ব্রোকারে ইনভেস্টমেন্ট সচেতন হউন।
নগদ ক্যাশ বা পণ্য ওফারঃ
অনেক ব্রোকার নতুন লাইভ একাউন্ট খুলে কেশ পুরষ্কার সহ নানা রকম আকর্ষণীয় পণ্য যেমন আইফোন, এন্ড্রয়িড ইত্যাদি অফার করে প্রকৃতপক্ষে এইগুলো হল আপনাকে ইনভেস্ট করানোর এক একটি ফাঁদ। এই সব ব্রোকার থেকে সচেতন থাকুন।
ফিস্কাল পেরাডাইসঃ
যদি আপনার ব্রোকারটি ফিস্কাল পেরাডাইস টাইপের ব্রোকার হয়ে থাকে তাহলে ইনভেস্ট করার আগে কয়েকবার ভাবুন। যে আপনি যখন টাকা উত্তোলন করতে যাবেন বা সরাসরি তাদের অফিস ভিজিট করতে যাবেন তাদের কাউকে আসলে সেখানে পাবেন তো !
আননোউন অথোরিটিঃ
ব্রোকার গুলো যখন মার্কেটে আসে তখন ন্যূনত্বম একটি অথোরিটি নিয়ে আসে তবে সেই ক্ষেত্রে ও কিছু বিষয় স্পষ্ট হতে হবে আপনাকে। যেমন ব্রোকারটি যে অথোরাইজড নাম্বার ব্যাবহার করছে সেটি আসলে তার কোম্পানির অথোনটিকেশন নাকি ভায়া। যেমন Kiwifxbank নামক ব্রোকারটি এই ধরনের একটি কাজ করেছিল তারা Vault Market Pvt নামক একটি প্রতিষ্ঠানের Sister Concern হয়ে Kiwifxbank নামে কাজ শুরু করেছিল কিন্তু প্রকৃতপক্ষে Kiwifxbank কোন অথোরাইজেশন ছিল না।
আসুন এইবার জেনে নেয় একটি সলিড ব্রোকার কিভাবে নির্বাচন করবেন।
রিভিউ/রেপুটেশনঃ
একটি ব্রোকার যখন কাজ শুরু করে তখন ঐ ব্রোকারের ভালো/মন্দ, সুবিধা/অসুবিধা নিয়ে ফরেক্স বিসয়ক অনেক সাইটে লিখালিখি হয়। যেমন এই ব্রোকারটি কেমন, তার লেনদেন কতটা স্বচ্ছ, তার ভালো দিক কি এবং খারাপ দিকগুলোই কি কি , ইত্যাদি। ঐখানে ভিবিন্ন ট্রেডার উক্ত ব্রোকার সম্পর্কে তাদের নিজ নিজ মতামত লিখে যা আপনাকে সাহায্য করতে ঐ ব্রোকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে। যখন অনেক ট্রেডার মতামত দেয় যে ব্রোকারটিতে স্লিপেজ আছে, রিকোট হয় কিংবা টাকা উত্তোলনে সমস্যা তখন ঐ ব্রোকারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
সময়কালঃ
সোজাভাবে ব্রোকারের বয়স যত বেশি ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে সেই ব্রোকারে আপনার নির্ভরতা তত বেশি। প্রতি বছর অনেক ব্রোকার আসে যায়, তাই ব্রোকারটিকে স্টাডি করে দেখুন তার সময়কাল কত, মোটামুটি ৩ বছরের সময় ধরে যারা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে তাদের ক্ষেত্রে পজেটিভ পারস্পেক্টিভে এগুতে পারেন।
রেগুলেশনঃ
আগেই বলেছি ব্রোকার রেগুলেশন খুব গুরুত্তপুর্ন একটি ফ্যাক্ট। ব্রোকার বাছাই ক্ষেত্রে দেখে নিন ন্যূনত্বম তার ঐ দেশীয় স্টক এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন সহ ন্যাশনাল অথোরিটি আছে কি না। যেমন US ব্রোকারের ক্ষেত্রে দেখে নিন CFTC/NFA এবং UK ব্রোকারের ক্ষেত্রে FSA রেগুলেটেড কিনা।
Virgin Islands রেগুলেটেড ব্রোকারে ট্রেড করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
হেডকোয়াটার লোকেশনঃ
সলিড এবং রিয়েল ব্রোকার তাদের শারীরিক অস্তিত্ব নিয়ে ব্যবসা করে কারন এই প্রকার ফিনেনশিয়াল ব্যবসা ফিস্কাল পেরাডাইসে সম্ভব না। তাই ব্রোকারের অফিস লোকেশন নিশ্চিত হউন।
ECN নাকি ডিলিং ডেস্ক/ মার্কেট মেকারঃ
ব্রোকার সাধারণত দুপ্রকার, মার্কেট মেকার যারা আপনার প্রতিটি ট্রেডের বিপরীতে আরেকটি ট্রেড ওপেন করে এবং নিজেরা একটি মার্কেট তৈরি করে আপনাকে মুল মার্কেট বায়ার সেলার থেকে দূরে রেখে নিজেরা লাভবান হয়।
আর ECN – Electronic Communication Network ব্রোকার হল রিয়েল ব্রোকার যারা মুলত সরাসরি বায়ার এবং সেলারকে কানেক্ট করে ট্রেড পরিচালনা করে।( ডিলিং ডেস্ক ব্রোকার এবং ECN ব্রোকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমার এই পোস্টটি পড়ুন। )
এছাড়া ও ব্রোকার স্প্রেড, কাস্টোমার সাপোর্ট সহ আরো কিছু খুটিনাটি বিষয় পরিস্কার জেনে ব্রোকার নির্বাচন করতে পারেন এবং ট্রেড শুরু করতে ।